Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
৪৮৫ শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করবে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক
বিস্তারিত

আগামী বছর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংকের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। দেশের ৪৮৫টি উপজেলায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ৪৮৫টি শাখা খোলা হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিলে তবেই এর কার্যক্রম শুরু হবে।

 

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৪৮৫টি উপজেলায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ৪৮৫টি শাখা খোলা হবে। বিষয়টিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিলেই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রায় কোনো বাধা থাকবে না। এ ব্যাপারে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৩০ জুন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক।

 

গ্রামীণ ব্যাংকের বিকল্প হিসেবে না হলেও এটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সরকার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক গঠন করেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে এর কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। যেমন- গ্রামীণ ব্যাংক যেখানে ক্ষুদ্র ঋণের ওপর গুরুত্ব দেয় সেখানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ওপর গুরুত্ব দেবে। গ্রামীণ ব্যাংক ঋণগ্রহীতা শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয় না, বিশেষায়িত এ ব্যাংক তা দেবে। ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সরকার থেকে বলা হয়েছে, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের আওতাধীন একটি বাড়ি একটি খামার শীর্ষক প্রকল্প দেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করা, তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ নারীর ক্ষমতায়ন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। এছাড়া গ্রাম সংগঠন সৃজন, তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, তহবিলের জোগান এবং ঋণদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনেও এটি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। আর এ কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং তাদের সঞ্চয় ও অর্জিত লেনদেন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঋণ ও অগ্রিম প্রদান এবং বিনিয়োগের জন্য বিশেষায়িত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তবে এটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেনি।

 

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় সভায় পরিশোধিত মূলধন আদায়ের লক্ষ্যে সমিতি পর্যায়ে শেয়ার বণ্টন নিয়ে নানা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের আইনানুযায়ী, পরিশোধিত শেয়ার মূলধনের ৪৯ শতাংশ সমিতি কর্তৃক ৯৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় গঠিত গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সব সদস্যকে এ টাকা পরিশোধ করতে হবে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ৯৮ কোটি টাকা সংস্থানের জন্য সদস্যরা ১০০ টাকা মূল্যের সর্বনিম্ন দুটি এবং অনধিক ছয়টি অর্থাৎ দুই থেকে ছয়টি শেয়ার কেনার সুযোগ পাবেন। এছাড়া প্রতি সদস্যকে বাধ্যতামূলক প্রতি বছর ১০০ টাকা মূল্যের একটি শেয়ার কিনতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সদস্যদের বেশকিছু শর্ত পালন করতে হবে। শর্তগুলো হলো- সমিতিভুক্ত একজন সদস্য অন্য একজন নিয়মিত সদস্যের কাছে অথবা সমিতির কাছে শেয়ার বিক্রি ও হস্তান্তর করতে পারবেন। তবে কোনো অবস্থাতেই অনিয়মিত সদস্য বা সমিতির বাইরে কোনো ব্যক্তির কাছে শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না। একই সঙ্গে কোনো সদস্য পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ১০টির বেশি শেয়ার ক্রয় বা অর্জন করতে পারবেন না। ঋণ খেলাপি, নিয়মিত সঞ্চয় না দেয়া, ঋণ নিয়ে খামার করা হয়নি ইত্যাদি অনিয়মে জড়িত সদস্য ব্যাংকের সদস্য শেয়ার কিনতে পারবেন না।

 

জানা গেছে, ১ হাজার কোটি টাকা অনুমোদিত ও ২০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্রঋণ মডেলের আদলে বিশেষায়িত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক যাত্রা শুরু করবে। তবে ব্যাংক সময়ে সময়ে সরকারের অনুমোদনক্রমে সরকারি গেজেট ও প্রজ্ঞাপন দ্বারা অনুমোদিত মূলধন অপরিবর্তিত রেখে পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে পারবে। পরিশোধিত মূলধনের ২০০ কোটি টাকার মধ্যে ৫১ শতাংশ হবে সরকারের আর বাকি ৪৯ শতাংশ থাকবে প্রকল্পের আওতায় গঠিত ঋণ গ্রহীতা শেয়ার হোল্ডারদের। অনুমোদিত মূলধন ১০০ টাকা মূল্যমানের ১০ কোটি শেয়ারে বিভক্ত থাকবে। ব্যাংক পরিচালনায় ১৫ সদস্যের বোর্ড থাকবে। এর মধ্যে আটজন সরকার কর্তৃক মনোনীত হবেন। বাকি সাতজন সদস্য নির্বাচিত হবেন প্রশাসনিক বিধি দ্বারা সদস্য শেয়ার হোল্ডারদের প্রতিনিধি হিসেবে। সরকার কর্তৃক নিযুক্ত পরিচালকদের থেকে একজন চেয়ারম্যান হবেন। এ ব্যাংকের পরিচালকদের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ তিন বছর। ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ক্রমে বোর্ড কর্তৃক নিযুক্ত হবেন। এক নাগাড়ে দুই মেয়াদ পর্যন্ত পরিচালকরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে ব্যাংকের বোর্ড ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দিতে পারবে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক সর্বোচ্চ ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকতে পারবেন। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাধ্যমে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ওই তহবিল থেকে পরিবারগুলো অর্থনৈতিক কর্মকা- চালিয়ে যেতে পারবে। এসব পরিবার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে তাদের সঞ্চয় জমা রাখতে পারবে, ঋণও নিতে পারবে। এটি বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে সমিতি ও সমিতির সাধারণ সদস্যদের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ব্যবসা ব্যতীত গৃহায়নসহ সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড, নির্ধারিত মেয়াদ এবং শর্তসাপেক্ষে জামানতসহ বা ব্যতীত নগদ বা বস্তুগত ঋণ প্রদান, সঞ্চয়ে উৎসাহিত করা, সঞ্চয় জমা রাখা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, কৃষি, কৃষিজাত ও কুটির শিল্পে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধকরণসহ অর্থায়নসংক্রান্ত কার্যক্রম চালাবে।

ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
08/02/2015